আল্লাহ তা’আলা মানব জাতির হেদায়েতের জন্য প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর উপর দুই প্রকার ওহী নাযিল করেন। এক মধ্যে একটি হল ওহীয়ে মাতলু (যা তেলাওয়াত করা হয়) তথা কুরআন। আরেকটি হল ওহীয়ে গাইরে মাতলু (যা তেলাওয়াত করা হয় না) তথা হাদিস।
আর যুক্তির দাবী হল, যা আল্লাহ তা’আলা মানব জাতির হেদায়েতের জন্য পাঠাবেন তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা আল্লাহ তায়ালাই করবেন। কেননা তা যদি সংরক্ষিত না থাকে তাহলে মানবজাতি হেদায়েত তথা সঠিক পথ কিভাবে পাবে? সুতরাং বিষয়টা ঐ মহিলার ন্যায় অনর্থক হয়ে গেল, যে কাপড় বুনন করল পরিধানের জন্য। কিন্তু কাপড় বুনন শেষে ছিঁড়ে ফেলল।
মোটকথা, কুরআন হাদিসকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা আল্লাহ তায়ালা করবেন, এটাই হল যুক্তির দাবি। কিন্তু কুরআন ও হাদিস সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য আছে। কুরআন নাজিল হওয়ার সাথে সাথেই নবীজি (সা.) সাহাবাদের মাধ্যমে তা লিখে নিতেন। আর এভাবেই পুরো কুরআন মাজীদ নবীজির যুগে লেখা হয়ে যায়।
বিপরীতে হাদিস সংরক্ষণ এর মূল ভিত্তি ছিল হিফজ তথা মুখস্থ শক্তি। আর আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে সীমাহীন মেধা দান করেছিলেন। কেননা আল্লাহ তা’আলার একটা নিয়ম হল: যখন বাহ্যিক উপকরণ দুর্বল থাকে তখন কুদরতি উপকরণকেই আল্লাহ তায়ালা শক্তিশালী করেন। আর যখন বাহ্যিক উপকরণ শক্তিশালী থাকে তখন কুদরতি উপকরণ দুর্বল হয়ে যায়।
উদাহরণস্বরূপ: আমাদের দেশে যখন মোটরযান নামক বাহ্যিক উপকরণ একেবারে দুর্লভ ও কম ছিল। তখন পা নামক কুদরতি উপকরণ শক্তিশালী ছিল। এমনকি মানুষ এক জেলা থেকে আরেক জেলা, বিভাগ থেকে আরেক বিভাগ পায়ে হেঁটে যেত।
কিন্তু পরবর্তীতে যখন যানবাহন নামক বাহ্যিক উপকরণ শক্তিশালী হলো তখন মানুষের কুদরতি উপকরণ দুর্বল হয়ে গেল। ফলে এখন দেখা যায় যে, বাড়ির পাশেই বাজার কিন্তু পায়ে হেঁটে যাওয়ার ইচ্ছে মানুষ করে না। বরং রিকশা-ভ্যানে করে যায়।
ঠিক তদ্রূপ নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে যেহেতু লেখার উপকরণ নামক উপকরণ একেবারেই কম ছিল। এ কারণে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে সীমাহীন মেধা দান করেছিলেন।
আর এখন লেখার উপকরণ বেড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের মেধা শক্তি কমে গিয়েছে। এজন্য আমরা শুনতে পাই সাহাবী, তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ী (রা.)-এর যোগের মানুষের শত শত, হাজার হাজার, লাখ লাখ হাদিস সহ মুখস্থ ছিল। এই যুগেও একশত হাদিস মুখস্থ শোনাতে পারবে, এটাই বড়ই দুষ্কর।
উদাহরণস্বরূপ: হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু)-এর স্মৃতি শক্তির ঘটনা –
খলিফা আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ান হযরত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু)-এর স্মৃতি শক্তি পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে একশত হাদিস পেশ করতে বললেন। আর অন্যদিকে একজন লেখককে তা লিখে রাখতে বললেন। সাহাবী আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) একশত হাদিস বললেন আর তা লিখে রাখা হলো।
কিন্তু তিনি তা জানতেন না। অতঃপর পরবর্তী বছর আবার তাকে বিগত বছরের শুনানো হাদিসগুলোকে পুনরায় শুনাতে বলা হলো। আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) জীবন্ত টেপ রেকর্ডারের মত হুবহু আগের মত শুনিয়ে দেন।
সূত্র: আল ইসাবা
সুবিধার জন্য এখন আমরা হাদিস সংকলনের ইতিবাচক এই চারটি যুগে ভাগ করতে পারি।
১. নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগ থেকে নিয়ে ৯৯ হিজরি হযরত ওমর বিন আব্দুল আজিজ (রহমতুল্লাহি আলাইহি)-এর যুগ পর্যন্ত
।
২. ওমর বিন আব্দুল আজিজ (রহমতুল্লাহি আলাইহি)-এর যুগ থেকেই নিয়ে সিহাহ সিত্তার লেখক তথা বুখারী, মুসলিম প্রমুখগণের যুগ পর্যন্ত (৩য় শতাব্দী পর্যন্ত।)
৩. বুখারী, মুসলিম (রহমতুল্লাহি আলাইহি)-এর (৩য় শতাব্দী) থেকে নিয়ে চতুর্থ শতাব্দীতে ইবনে খুজাইমা (রহমতুল্লাহি আলাইহি)- এর যুগ পর্যন্ত।
৪. ইবনে খুজাইমা (রহমতুল্লাহি আলাইহি)-এর পরবর্তী যুগ।
১ম শতাব্দী হিজরি-
নববী যুগে সাহাবায়ে কেরাম তিনভাবে হাদিসকে সংরক্ষণ করেন।
প্রথম পদ্ধতি: মুখস্থ রাখার মাধ্যমে। (এটাই ছিল ব্যাপক।)
দ্বিতীয় পদ্ধতি: আমলী চর্চার মাধ্যমে হাদিসকে সংরক্ষণ করেছেন।
তৃতীয় পদ্ধতি: লেখার মাধ্যমে। (এটা কম।)
কেননা নবীজী (সা.) হাদিসকে ব্যাপকভাবে অনুমতি দেননি। কারণ এতে মানুষ মুখস্থ বিদ্যাকে হারিয়ে ফেলবে। লেখা নির্ভর হয়ে যাবে এবং কোরআনের সাথে হাদিসের মিশে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। এজন্য অনেক সাহাবা হাদিস মুখস্থ করার মাধ্যমে হাদিসকে সংরক্ষণ করেছেন।
আবার কোন কোন সাহাবীকে লেখার অনুমতি নবীজি সা. দিয়েছেন।
যেমন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: قيدوا العلم بالكتاب (লেখার মাধ্যমে ইলমকে সংরক্ষণ রাখ।)
আরেকটি হাদিস: ইয়ামানি এক সাহাবী মক্কা বিজয়ের পর ভাষণকে লিপিবদ্ধ করার আবেদন নবীজির কাছে করলে, নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: اكتبوا لابي شاه (তোমরা আবু শাহ এর জন্য ভাষণটা লিখে দাও।)
যে সকল সাহাবী হাদিস মুখস্থ করার গুরুত্ব দিতেন তাদের মধ্যে হযরত আবু বকর, ওমর, ইবনে আব্বাস, আবু সাঈদ খুদরী, আবদুল্লাহ ইবনে উমর ও আবু মুসা আশ’আরী (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুম) অন্যতম।
কিন্তু নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পরবর্তী যুগে আবু বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) অনেককেই হাদিস লেখার অনুমতি দেন এবং নিজেরাও কোন কোন হাদিস লিখে বিভিন্ন জায়গায় পাঠান।
আর সে সকল সাহাবায়ে কেরাম হাদিস লিখতেন অথবা তার অনুমতি দিতেন তাদের মধ্যে হযরত আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা), আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু), আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা), ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু), আনাস বিন মালেক (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু), হাসান ইবনে আলী (রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু), আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু), জাবের (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) অন্যতম।
সাহাবাদের যুগে যে সকল লিখিত হাদিসের কিতাব প্রসিদ্ধ ছিল, তার নাম-
১. সহীফায়ে সাদ বিন উবাদা (রা.) ২. সহীফায়ে আব্দুল্লাহ বিন আবি আওফা (রা.) ৩. নুসখায়ে সামুরা বিন জুন্দুব (রা.) ৪. কিতাবে আবি রাফে মাওলান্নাবী (রা.) ৫. আবু হুরাইরা (রা.)-এর সহীফায়ে সহীহা। ৬. সহীফায়ে আবু মুসা আশ’আরী (রা.) ৭. সহীফায়ে জাবেন বিন আব্দুল্লাহ ৮. আব্দুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস (রা.)-এর সহীফায়ে সাদীক্বাহ।
তাবেঈনদের যুগ –
সাহাবায়ে কেরামের যুগ এরপর যখন তাবেঈগণ আসে, তখন হাদিস লেখার ওপর নিষেধাজ্ঞা না থাকার কারণে অনেক ভাবেই লেখার প্রতি মনোযোগ দেন। যারা সাহাবাদের থেকে হাদিস লিখতেন-
১. আইয়ুব সুখাতিয়ানী (১৩১ হি.) ২. হিশাম ইবনে উরওয়া (১৪৬ হি.) ৩. আবু উসমান উবাইদুল্লাহ বিন ওমর (১৪৭ হি.)
তাছাড়া বড় বড় তাবেঈগণ যেমন: সাঈদ বিন জুবায়ের, সাঈদ বিন মুসায়্যিব, আমের শাবী (রা.)। তারা হাদিস লেখার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতেন।
এরপর শুরু হলো হাদীস সংকলনের এক নতুন অধ্যায়।
২য় শতাব্দী হিজরি-
ওমর বিন আব্দুল আজিজ (রহমতুল্লাহি আলাইহি) খলিফা হওয়ার পর হাদিস সংকলনের প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগ দেন। অতঃপর মদিনার গভর্নর আবু বকর হাযমকে এই মর্মে চিঠি পাঠান যে, তোমরা যেখানে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদিস পাও, তা লিখে ফেলো।
কেননা আমি ইলম বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এবং উলামায়ে কেরাম চলে যাওয়ার আশংকা করছি।
অতঃপর আবু বকর বিন হাযম তার উপদেশ আদেশ পালনার্থে উমরা বিন আব্দুর রহমান এবং কাসেম বিন মুহাম্মদ, যারা আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু)-এর ছাত্র ও ভাতিজা ছিলেন। তাদের থেকেই হাদিস লিখিয়ে ওমর বিন আব্দুল আজিজ (রহ.)-এর কাছে পাঠান। তার কাছে হাদিস পৌঁছার পূর্বে তিনি মারা যান।
মারা যাবার পূর্বে তিনি বিভিন্ন শহরের ওলামায়ে কেরামকে হাদিসগুলো জমা করতে বলেন। তার এই আহবানে সাড়া দিয়ে যারা হাদিস সংকলন শুরু করেন তারা হলেন:
১. মুহাম্মদ বিন শিহাব যুহরী (১২৪ হি.) ২. আবু হানিফা (১৫০ হি.) ৩. মুহাম্মদ বিন ইসহাক (১৫১ হি.) ৪. আওযায়ী (১৫৬ হি.) ৫. সুফিয়ান বিন সাঈদ ছাওরী (১৬১ হি.) ৬. মালেক বিন আনাস (১৭৯ হি.) ৭. আব্দুল্লাহ বিন মুবারক (১৮১ হি.) আরো অনেক বড় বড় আলেম রয়েছেন যারা হাদিস সংকলন করেন।
এই শতাব্দীতে হাদিসের যে কিতাবগুলো প্রসিদ্ধি লাভ করেছে:
১. মুসনাদে আবু হানিফা। ২. মুয়াত্ত্বা মালেক। ৩. মুয়াত্ত্বা মুহাম্মদ। ৪. কিতাবুল আছার। ৫. জা’মে সুফিয়ান ছাওরী। ৬. মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক। ৭. মুসান্নাফে ইবনু আবি শাইবা।
হিজরি তৃতীয় শতাব্দী –
এই শতাব্দীতে হাদিসের সিংহভাগ সংকলিত হয়ে যায়। তবে দ্বিতীয় শতাব্দীর শেষ দিকে ও তৃতীয় শতাব্দীর শুরুর দিকে আলেমগণ একটু ভিন্নভাবে হাদিস সংকলন করা শুরু করেন। এ সময় অনেক কিতাব রচিত হয় সেগুলোর মধ্যে প্রসিদ্ধ কিছু হল:
১. মুসনাদে আবু দাউদ ত্বয়ালিসী (২০৪ হি.) ২. মুসনাদে নায়াইম বিন হাম্মাদ (২২৮ হি.) ৩. মুসনাদে মুসাদ্দাদ বিন মুসারহাদ (২২৮) ৪. মুসনাদে ইয়াহইয়া বিন মঈন ৫. মুসনাদে আবু খায়ছামা যুহাইর বিন হারব (২৩৪) ৬. মুসনাদে ইসহাক বিন রাহুয়াহ (২৩৮ হি.) ৭. মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল (২৪১) ৮. মুসনাদে আব্দুল্লাহ দারেমী (২৫৫)
আরো অনেক কিতাব লেখা হয়েছে, যার সংখ্যা ‘হাদিস আওয়ার ফাহমে হাদিস’ কিতাবে ৩৪টি র কথা উল্লেখ রয়েছে। মুসান্নাফাত, মুসনাদাত কিতাব লেখার পর এই শতাব্দীতে এমন কিছু মুহাদ্দিসগণ আসেন এবং যখন তারা তাদের সামনে হাদিসের বিশাল ভাণ্ডার দেখলেন, তখন তারা সংকলনের নতুন দরজা খুললেন এবং হাদিসের বিশাল ভাণ্ডার থেকে সহীহ এবং সাক্বীমকে আলাদা করে প্রত্যেক অধ্যায় সংশ্লিষ্ট আমলযোগ্য হাদিসগুলোকে একত্রিত করলেন।
আর এই পদ্ধতিতে যারা কিতাব লিখেছেন তাদের প্রথম কাতারে হলে ৬ কিতাবের লেখক:
১. ইমাম মুহাম্মদ বিন ইসমাঈল-এর সহীহ বুখারী। (২৫৬ হি.)
২. ইমাম মুসলিম ইবনুল ইজ্জাজ-এর সহীহ মুসলিম। (২৬১ হি.)
৩. ইমাম সুলাইান বিন আশআছ-এর সুনানে আবু দাউদ। (২৭৫ হি.)
৪. ইমাম আব্দুর রহমার আহমদ বিন শুয়াইব-এর সুনানে নাসায়ী। (৩০৩ হি.)
৫. ইমাম আবু ঈসা মুহাম্মদ ইবেন ঈসা-এর সুনানে তিরমিযী। (২৭৯ হি.)
৬. ইমাম মুহাম্মদ বিন ইয়াজিদ-এর সুনানে ইবনে মাজাহ। (২৭১ হি.)
হিজরীর চতুর্দশ শতাব্দী –
তৃতীয় শতাব্দীতে যদিও হাদিস সংকলনের কাজ একেবারেই শেষ প্রান্তে পৌঁছে, কিন্তু কিছু কাজ বাকি থেকে যায়। এ কাজ পরিপূর্ণ করার জন্য মুহাদ্দিসীনের এক জামাত তৈরি হয়ে যায়, যারা এই কাজটি আঞ্জাম দিবেন। আর বলা যায় এটাই হলো হাদিস সংকলনের সর্বশেষ শতাব্দী।
এই শতাব্দীর প্রসিদ্ধ কিতাব-
বুখারী (রহ.) ও মুসলিম (রহ.)-এর অনুসরণে কোন কোন মুহাদ্দিস সহীহ হাদিসগুলোকে আলাদা করেন এবং আমলযোগ্য হাদিসকে একত্রিত করার চেষ্টা করেন। যেমন:
১. সহীহ ইবনে খুযায়মা, মুহাম্মদ ইবনে খুযায়মা।
২. সহীহ ইবনে হিব্বান, আবু হাতেম মুহাম্মদ ইবনে হিব্বান।
৩. সহীস ইবনে সাকান, সাহদ বিন উসমান বিন সাকান।
কোনো কোনো মুহাদ্দিস সুনানে আরবাআর অনুকরণে হাদিস সংকলন করেন, আহকাম সংক্রান্ত হাদিসগুলো একত্রিত করার জন্য।
যেমন: সুনানে দারে কুতনী, সুনানে কুবরা, ইমাম বাইহাকী।
কোনো মুহাদ্দিস আবার বুখারী, মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী তাদের না আনা হাদিসগুলো একত্রিত করেন। যেমন:
১. মুস্তাদরাক আ’লাস সহীহাইন, ইমাম হাকেম নিশাপুরী।
২. ইলযামাত, ইমাম দারে কুতনী (রহ.)।
এভাবে কোন কোন মুহাদ্দিস নিজ সনদে বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য কিতাবের উপর ইস্তেখরাজ করেন। একে মুস্তাখরাজ বলা হয়।
যেমন: ১. মুস্তাখরাজে আবু বকর ইসমাঈলী ২. মুস্তাখরাজে আবু আওয়ানা ৩. মুস্তাখরাজে আবু নুয়াইম ইস্পাহানী
কেউ আবার নিজস্ব সনদে হরফের তারতীবে সাহাবীদের হাদিসকে একত্রিত করেন। যেমন: ইমাম আবুল কাশেম সুলেমান বিন আহমদ আত তাবরানী। তিনি মু’জামুল কাবির লিখেন। আর আরে দুটি কিতাব রয়েছে। ১. মু’জামুল আওসাত ২. মু’জামুল সগীর
এভাবে হিজরি পঞ্চম শতাব্দীতে থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত হাজারো অসংখ্য হাদিসের কিতাব লেখা হয়েছে আগের কিতাবের উপর ভিত্তি করে। নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম)-এর দোয়া লাভের আশায়।
কেননা নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দোয়া করেন “আল্লাহ তায়ালা এমন ব্যক্তিকে (কেয়ামতের দিন) উজ্জ্বলতা দান করুন, যে আমার থেকে কোন হাদিস শুনলো অতঃপর তা মুখস্থ করল এমনকি তা অন্যের কাছে পৌঁছে দিল…..।”