জান্নাতুল বাকি মদিনায় অবস্থিত মসজিদে নববী সংলগ্ন একটি কবরস্থানের নাম। যাকে বাকিউদ গারকাদ বলা হয়। সেখানে রাসুল সা. এর পরিবার-পরিজন সহ অসংখ্য সাবাহায়ে কেরামকে দাফন করা হয়। ইমাম মালেক রহ. এর মতে, বাকিউদ গারকাদে দশ হাজার সাহাবীকে দাফন করা হয়।
তাতে রয়েছে – রাসুল সা. এর কন্যা হযরত রোকাইয়া রা., রাসুল সা. এর চাচা হযরত আব্বাস রা., রাসুল সা. এর পুত্র হযরত ইবরাহিম রা., রাসুল দৌহিত্র হযরত হাসান রা., হযরত উসমান ইবনে মাজঊন রা., রাসুলর দুধ মা হযরত হালিমা সাদিয়া রা., উম্মুল মুমিনিন হযরত আয়েশা রা.,ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান রা., হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ রা., হযরত সাআদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রা., হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. প্রমুখ এর কবর।
তাছাড়া, ইমাম মালিক ইবনে আনাস রহ., ইমাম মুহাম্মদ হায়া আল সিন্ধি রহ.,ইমাম শামিল রহ., মুহাম্মদ সাইয়িদ তানতাওয়ি রহ., মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভি রহ., খলিফা দ্বিতীয় আবদুল মজিদ (ওসমানী খিলাফতের শেষ খলিফা) কে বাকিকে দাফন করা হয়।
জান্নাতুল বাকি জিয়ারতের পদ্ধতি:
জান্নাতুল বাকিতে সমাহিত মুমিনগণের প্রতি সালাম দেয়ার সুন্নত তরিকা হলো অনির্দিষ্টভাবে সবাইকে একসাথে সালাম দেয়া ও তাদের জন্য দোয়া করা। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)আহলে বাকির যিয়ারতকালে বলতেন।
السَّلَامُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِيْنَ، وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللهُ بِكُمْ لاَحِقُوْنَ، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِأَهْلِ بَقِيْعِ الغَرْقَدِ.
‘আপনাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক, মুমিন সম্প্রদায়ের আবাস স্থল। আমরা আপনাদের সাথে যুক্ত হব ইনশাআল্লাহ। হে আল্লাহ আপনি আহলে বাকিদেরকে মাফ করে দিন।’
বুরাইদা (রা.) এর বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, ‘কবর যিয়ারতে গেলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)তাদেরকে শিখাতেন। তাদের মধ্যে থেকে একজন বলতেন :
السَّلَامُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الدِّيَارِ مِنَ المُؤْمِنِيْنَ وَالمُسْلِمِيْنَ ، وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللهُ لَلَاحِقُوْنَ ، أَسْأَلُ اللهَ لَنَا وَلَكُمْ العَافِيَةَ.
‘আপনাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক হে অত্র জায়গায় বসবাসকারী মুমিন-মুসলিমগণ। আমরা (আপনাদের সাথে) যুক্ত হব, ইনশাআল্লাহ। আমাদের জন্য ও আপনাদের জন্য আল্লাহর দরবারে পরিত্রাণ কামনা করি।’
জান্নাতুল বাকি জিয়ারতের সময়:
দৈনিক ফরজের নামাজ আদায়ের পর থেকে ঘণ্টাখানিক সময়ের জন্য সর্ব সাধারণের জন্য জান্নাতুল বাকির প্রবেশপথ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এ সময়ে জান্নাতুল বাকি যিয়ারত করা যায়। এ ছাড়া অন্যান্য সময় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না। সর্বোত্তম হলো মসজিদে নববীতে ফজরের নামাজ আদায় করে জান্নাতুল বাকি যিয়ারত করা।