ইতিহাসের পাতাকে নাকি পেছনে ঘুরানো যায় না। কিন্তু সেটাই করতে চাইছে ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ RSS। সংঘটনটির প্রধান মোহন ভাগবত অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন দেখছেন, তার সত্য হলে বাংলাদেশ নামে থাকবে না আলাদা কোনো রাষ্ট্র। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলংকা ও মিয়ানমার।
দক্ষিণ এশিয়ায় এই ছয়টি রাষ্ট্র মিলে অখণ্ড ভারত গড়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত।
ভারতের ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেওয়া বক্তব্যে এ লক্ষ্যের কথা বলেন তিনি।
অখণ্ড ভারত কিভাবে শাসিত হবে
ভাগবতের বক্তব্য অনুযায়ী, অখণ্ড ভারত হবে হিন্দু রাষ্ট্র। সে রাষ্ট্রে থাকবে না মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের ভোটাধিকার। ভোটাধিকার না থাকলেও অন্যান্য নাগরিকদের মত সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। রাজধানী হবে বারাণসী। অখণ্ড ভারতের এ সংবিধানের খসড়া তৈরি করেছেন ভারতের ৩০জন ধর্মগুরু ও পণ্ডিত।
সংবিধানের প্রচ্ছদে যে মানচিত্র আঁকা হয়েছে। তাতে পশ্চিমে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান, পূর্বে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার এবং দক্ষিণে মিয়ানমারের কোনো স্বকীয় অস্তিত্ব রাখা হয়নি। পাঁচটি দেশ হয়ে যাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত। হিন্দু ধর্মের প্রতীক একটি গৌরিক পতাকা রাখা হয়েছে প্রচ্ছদে।
এই খসড়া প্রকাশের পরের দিন মোহন ভাগবত প্রতিষ্ঠার দিনক্ষণ ঠিক করে দেন। ভারতীয় স্বাধীনতার শতবর্ষে ২০৪৭ সালে অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠা হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরো বলেন, একমাত্র বাধা হল ভয়। ভয়কে জয় করতে পারলে সব কিছু সম্ভব। নিজেকে প্রশ্ন করুন দেশ এত বিশাল ছিল। কি করে এত কমে গেলো।
সেই পুরনো ভারতকে ফিরিয়ে আনতে চায় আরএসএস। ভারত থেকে যে সকল দেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে তাদের সকলকেই নিয়েই প্রতিষ্ঠিত হবে হিন্দু রাষ্ট্র। সে রাষ্ট্রে ১৬ বছর বয়সীদের ভোটাধিকার থাকবে। ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বয়স হবে ২৫। বর্ণ প্রথা অনুযায়ী দেশ শাসিত হবে। ব্রিটিশ আমলের কোনো আইনের অস্তিত্ব থাকবে না।
শিক্ষা ব্যবস্থায় আনা হবে জ্যোতিষ চর্চা, গণিত ও আয়ুর্বেদ। এই সংকল্পের কথা বেশ কয়েকদিন ধরে বলে চলেছেন মোহন ভাগবত।
এ দিকে দেশটির মুসলিম নেতা সাংসদ আসাদুদ্দীন খান ওয়াইসী খোঁচা মেরে বলেছেন, আগে চীন এবং পাকিস্তান ভারতের যে ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে। সেটা স্বাধীন করে দেখাক। তারপর না হয় অখণ্ড ভারতের কথা ভাবা যাবে।